বুনন মূল শিল্প উপাদান প্রসঙ্গে

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় – বুনন মূল শিল্প উপাদান প্রসঙ্গে।যা “সারা বিশ্ব জুড়ে নাচ” খন্ডের অন্তর্ভুক্ত।

বুনন মূল শিল্প উপাদান প্রসঙ্গে

 

বুনন মূল শিল্প উপাদান প্রসঙ্গে

 

আমাদের পক্ষে বিশ্বাস করা অসম্ভব যে, অবশেষে দেখা গেছে স্থান পরিবর্তনশীল নাচ অধিকাংশ ক্ষেত্রে খেলার উচ্ছাসে উদ্ভাবিত হয়েছে এবং তার কোন দার্শনিক দৃষ্টিকোণ বা ধর্মীয় প্রথাগত সম্পর্ক নাই। যদি আমাদের সাদামাটা গঠনশৈলী সম্বন্ধে সন্দেহ থাকে তবে আদিম মানুষের প্রত্যক্ষ আবেগ তাড়না থেকে অনেক দূরে উদ্ভব অগ্রবর্তী গঠনশৈলী বিবেচনায় আমরা অবশ্যই একই রকম সন্দেহ রাখতে পারব না।

এই প্রসঙ্গে কোন সূত্রই আমাদেরকে সহায়তাকারী কোন তথ্য প্রদান করতে সক্ষম হবে না, না পারবে আদিমমানুষের মধ্যে এই রকম নাচ প্রত্যক্ষকারী কোন পর্যটক, না পারবে কোন প্রাচীনকালের সভ্যলোকের বৃহৎ জাতিবর্গের ঐতিহাসিকগণ। তাই আমরা বাধ্য হয়ে আমাদের নিজেদের ব্যাখ্যা বিধিবদ্ধ করি।

যখন আমরা শিকল ও ক্রসিং (আড়াআড়ি) নাচের অঙ্গভঙ্গি বর্ণনা করতে সচেষ্ট হই আমরা সম্পূর্ণ স্বাভাবিকভাবে পছন্দ করি খুব পরিস্কার অভিব্যক্তি যেমন “মধ্য দিয়ে কাজ করা” “মিশ্রিত করা” “একত্রে বুনন করা”। যদি আমরা আমাদেরকে তাদের উপরে স্থান দেই আমরা দেখতে পাব বুনন ও বয়নশিল্পের আর্টের জগতে আছি।

যদি আমরা দেখি এই হস্তশিল্পের মধ্যে মৌলিক অঙ্গভঙ্গির প্রতীকের যোগসূত্র আছে তখন আমরা অবশ্যই তাদেরকেও নাচে প্রয়োগ করতে পারি যার ভঙ্গিমা একই রকম। যতদূর সম্ভব ১৮৪৫ খৃষ্টাব্দে, একটা পৌরানিক চিত্রলেখন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় যে, প্রতীকের অস্তিত্ব সত্যিকারভাবেই ছিল : “প্রাচীন পুরোহিতদের বাণী বুনন উৎপাদনের সমর্থক”।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

জে, জে, ব্যাচোফেন চৌদ্দ বৎসর পর একটা চটি বইতে লেখেন প্রাচীন কবর ফলকে দড়ির বুনানীর থিমের প্রতীক তাৎপর্য সম্বন্ধে। আমরা তা থেকে নিম্নলিখিত বক্তব্য উদ্ধার করি । “দড়ি বুনন একটা প্রতীক কার্যকলাপ যেটা প্রায়ই ঘটে এবং একই বিশ্বাসের উপর স্থাপিত যেমন সুতা কাটা ও বয়নের দেবীত্রয় (জন্ম, জীবন, মৃত্যুর তিনদেবী গীক পুরাণে). সুতাকাটা, বয়ন করার চিত্র প্রকৃতির আকৃতি ও গঠনশক্তির (প্রতিচ্ছবি) প্রতিনিধিত্ব করে।

যখন প্রকৃতির কর্মকান্ড এবং এটার শৈল্পিক আকৃতি গঠন ও সৃজনশীলতা উপস্থিত হয়, এইরূপে মানুষ সুতাকাটা, বুনন এবং বয়ন এই সকল হস্তশিল্পে প্রতিফলিত হয়ে স্বীকৃত হয় যদিও পৃথিবীবাসীর সৃজনশীল কাজের সঙ্গে অন্য সম্পর্কযুক্ত।

দুটা সুতা একত্রিত করতে গিয়ে তারা বুঝতে পারে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব এবং উভয় লিঙ্গের প্রজনন দৈহিক শক্তির সক্ষমতায় আবশ্যক। তাঁতের কৌশলে এই সম্পর্ক এখনও পরিস্কার বুঝা যায়। সুতার ক্রসিং (পারাপার) তাদের একটার পর আর একটার দৃষ্টিগোচর হওয়া ও অদৃশ্য হয়ে যাওয়াকে সেই চিত্রের উপস্থাপন, মনে হয় যার সঙ্গে তুলনা চলে প্রকৃতির সর্বক্ষেত্রে অবিরত কর্মকান্ড” ।

ব্যাচোফেনের দৃঢ়মূল তর্জমা স্থান পরিবর্তনশীল নাচের এক পর্যায়ে প্রয়োগ করা যেতে পারে। যাইহোক, এটা অবশ্যই পরিস্কার হওয়া উচিত যে, যে কোন কৃষ্টি যেখানেই উদ্ভব হোকনা কেন তার একটা চিন্তা-চেতনা এইরূপ আধ্যাত্মিক সম্পর্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

দেবীত্রয় আকৃতি ও প্রকৃতির ক্ষমতার সঞ্চারক, পৃথিবীবাসীর সৃষ্টি, প্রকৃতির অবিরাম কর্মকান্ড, এই সকল ধারণা শুধু মাত্র সেই কৃষি নির্ভর অর্ধেক মানবতাকে গভীরভাবে অভিভূত করতে পেরেছে। অর্জন নির্ভর অর্থনৈতিক জনগোষ্ঠী বিশেষ করে মাছ ধরা ও শিকারীদের কাছে প্রয়োজনীয়তার বাইরে ।

স্থান পরিবর্তনশীল নাচে আমরা জেনেশুনে যদি একসঙ্গে উদাহরণ হিসাবে আমাদের নিম্নলিখিত ছবি অনুসরণ করতে পারি যে, কৃষি ভিত্তিক কৃষ্টির মধ্য দিয়ে উদ্ভাবিত সমস্ত বিশদবিবরণের মাঝে শুধু দুটা ভিন্ন ধরনের ব্যতিক্ৰম দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ায় পোর্ট ষ্টিফেন্স ও নিকোবারগণ।

 

বুনন মূল শিল্প উপাদান প্রসঙ্গে

 

প্রথম স্তরের (কৃষ্টি বিকাশের) দিকে এদেরকে কিন্তু সহজেই অপরিপক্করূপে প্রদর্শিত করা যেত । অস্ট্রেলিয়াতে দুই সারির যোদ্ধা অনেক দূরত্ব রেখে পরস্পরকে দৌড়ায়ে অতিক্রম করত তারপর তারা তাদের আসল নাচ শুরু করত; নিকোবার দ্বীপে এক সারিতে নাচুয়েগণ সাজাসুজি গিয়ে যারা হাঁটু ভাঁজ করে বসত তাদেরউপরে চড়ে বসে, এখানে পরস্পর পরস্পরকে ভেদ করে সম্পূর্ণ অতিক্রম করা নাই ও প্রয়োজনীয় বাস্তব জিনিস দোলানর সম্পূর্ণ অভাব পরিলক্ষিত হয়।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment