আজকের আলোচনার বিষয়ঃ নৃত্যশিল্পী সুন্দর প্রসাদ

নৃত্যশিল্পী সুন্দর প্রসাদ
সুন্দর প্রসাদের জীবনাবসানের সঙ্গে সঙ্গে জয়পরে ঘরানায় যে অন্ধকার নেমে এল, জানিনা, সে ঘন অন্ধকার ভেদ করে আর কোনদিন কোন প্রতিভার উদয় হবে কি না!
কথক নৃত্যে জয়পরে ঘরানার একটি বিশিষ্ট নাম সুন্দরপ্রসাদ। পিতা চুমীলাল ও বড়ভাই জয়লালের কাছে ইনি প্রথম শিক্ষা পান জয়পরে ঘরানার নৃত্যের। তাঁর নিঃসন্তান খুল্লতাত দুর্গাপ্রসাদও তাঁকে সযত্নে নৃত্যে শিক্ষা দিয়েছিলেন। তারপর — তখনো শৈশব অতিক্রান্ত হয়নি—তাঁকে পাঠান হয়। লখনৌতে । সেখানে তিনি লখনৌ ঘরানার তালিম নেন বিখ্যাত নৃত্য বিন্দাদীনের কাছে। এইভাবে মাত্র বিশ বছর বয়সেই তিনি উভয় ঘরানার নাতো পারঙ্গম হয়ে ওঠেন। তখনই ভারতের বিভিন্ন স্থানে ননৃত্য প্রদর্শনি করে প্রভূত যশখ্যাতি অর্জন করেন এবং নৃত্যকলাকেই কৃত্তি হিসেবে গ্রহণ করেন । পরবর্তীকালে শিক্ষক রূপেও তাঁর নৈপণ্যে প্রকাশ পায় ।

বম্বেতে তিনি “মহারাজ বিন্দাদীন “স্কুল অফ কথক” নামে একটি শিক্ষা সংস্থা স্থাপন করেন এবং প্রায় তিরিশ বছর কৃতিত্বের সহিত অসংখ্য ছাত্রছাত্রী তৈরী করেন । ১৯৫৮ খৃষ্টাব্দে তিনি যোগদান করেন দিল্লীর “ভারতীয় কলা কেন্দ্রে” এবং শেষ পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন। ১৯৫৯ খৃষ্টাব্দে তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ দ্বার’ বিভা ষিত করা হয়। সেই উৎসবে, প্রায়- ঊনসত্তর-সত্তর বছর বয়সে সুন্দরলাল যে ননৃত্য প্রদর্শন করেন, তা অবিস্মরণীয়।
তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজনায় নাম : সুনলিনী দেবী, পাবিয়া ভগ্নিগণ, মেনকা দেবী, মোহনোয়া কল্যাণপরেকর, সোহনলাল, হীরালাল, রোশনকুমারী, রাণী কর্ণা, প্রিয় পাত্তার, উমা শর্মা, কুম দিনী লখিয়া প্রভৃতি ।

কিছুকাল ক্যানসার ও হৃদরোগে ভোগার পর ২৮শে মে ১৯৭৬ খৃষ্টাব্দে, প্রায় আশি বছর বয়সে দিল্লীতেই তিনি দেহত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুতে কথক নৃত্যের যে অপরণীয় ক্ষতি হল, তার কোনদিন পূরণ হবার নয়। সুন্দর প্রসাদ ‘সুন্দরলাল’ নামেও পরিচিত।
আরও দেখুনঃ
