নৃত্যশিল্পীর গুণাবগুণ

আজকে আমরা নৃত্যশিল্পীর গুণাবগুণ সম্পর্কে আলোচনা করবো

 

নৃত্যশিল্পীর গুণাবগুণ
নৃত্যশিল্পীর গুণাবগুণ

 

নৃত্যশিল্পীর গুণাবগুণ

সাথক নৃত্যশিল্পী হবার জন্য যে গুণগুলি অত্যাবশ্যক নৃত্যশিক্ষার প্রারম্ভে সেগুলি জানা দরকার। এখানে বর্ণিত গুণাবগণেগালি নারী ও পুরুষ— উভয়ের পক্ষেই প্রযোজ্য ।

গুণ

প্রথমত: নৃত্যশিল্পীর দেহ সুগঠিত হওয়া দরকার। রূপ ও লাবণ্য চিত্তাকর্ষক হওয়া দরকার । অতএব স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে—হ’তে হবে সাত্ত্বিক ভাবাপন্ন। সুকণ্ঠের অধিকারী না হলে যেমন কণ্ঠসঙ্গীতে সুনাম অর্জন করা যায় না, সুঠাহ দেহ না থাকলে নৃত্যশিল্পীর পক্ষে সুনাম অর্জন করা তেমনি কষ্টকর।

উচ্চতা ( height) মাঝামাঝি রকম হওয়াই ভালো আয়ত নেয়য, গল, মত্তার মত শদ্র ও সুন্দর দত্তরাজি, রক্তিম অধর, শঙ্খের মত গ্রীবা, সুডৌল বাহ, য, গল, সুগঠিত নিতত্ব—এগুলি সবই সফল নৃত্যকারের পক্ষে অপরিহার্য। তাছাড়া নৃত্যশিল্পীকে হতে হবে ধৈর্যশীল, পরিশ্রমী, উদারমনা তথা নম্র ও বিনীত। অটুট আত্মবিশ্বাস থাকা দরকার। সঙ্গীত ও নাট্য বিষয়ে সুনিপণ এবং রস ও ভাব প্রকাশে দক্ষতা প্রয়োজন।

 

নৃত্যশিল্পীর গুণাবগুণ
নৃত্যশিল্পীর গুণাবগুণ

 

অবগুণ

বলাই বাহুল্য, এই গুণেগুলির ব্যতিক্রম হ’লেই, সেগুলি অবগণের অর্থাৎ দোষের পর্যায়ে পড়ে।

নৃত্যশিল্পীদের গুণাবগুণ সম্বন্ধে বিভিন্ন গ্রন্থকারদের মতামত এখানে উদ্ধৃত করা হল।—এক্ষেত্রে নত কাঁকেই বোঝান হয়েছে । ‘নাট্যশাস্ত্রের মতে : নাত্যের প্রকৃত অধিকারিণীকে বৃদ্ধি, সত্ত্ব, সুন্দর অথচ স্বাভাবিক রূপে বিশিষ্ট, তাললয়ে দক্ষ, পরিপূর্ণ যৌবন, শিক্ষাগ্রহণের সামর্থ, শিক্ষাণীয় বস্তুর প্রতি আগ্রহ এবং উৎসাহ, স্মরণশক্তি, নৃত্যগীতে নৈপণ্যে, লজ্জা-ভয়-শ্রম-সহিষ্ণুতা প্রভৃতি গুণের অধিকারী হওয়া প্রয়োজন ।

‘অভিনয়দপ’ণে’র মতে :

তন্বী, রূপবতী, শ্যামা, পীনোন্নত পয়োধরা, প্রগলভা, সুরসিকা, বিশাল নয়না। গীতবাদ্য ও তাললগ্নে দক্ষ, মনোহর বেশভ যায় সুসজ্জিতা, কমনীয় লাবণ্যযান্ড ও প্রসন্নমখে পাকজ বিশিষ্ট্য গণেৰ্ত্তো নত কাঁই নর্তন করিবার অধিকারিণী।

 

নৃত্যশিল্পীর গুণাবগুণ
নৃত্যশিল্পীর গুণাবগুণ

 

‘সঙ্গীত রত্নাকরের’ মতে :

অঙ্গ সৌষ্ঠব, বদনমণ্ডল, বিধবাধর, বিশাল নয়ন, কঙ্ক,গ্রীবা, সুচার, দর্শন, ক্ষীণ কটি, স্থূল নিতম্ব, সঞ্চারিণী পল্লবিনী বাহুলতা, নাতিখব’, নাতিদীর্ঘ, নাতিপীন, শিরাপ্রকাশহীন দেহ, শ্যাম অথবা গৌরবর্ণা, লাবণ্য, কান্তি, মাধার্য, ঔদার্য ও প্রগলভ প্রভৃতি হলেই নত‘কীশ্রেষ্ঠ পাত্ররূপে বিবেচিত হবে।

শ্যামা মানে তপ্তকা নবর্ণ সংক্ষপশাঙ্গী যবতী। “শীতে খোসবাদী ে 6 সুখশীতলা। তপ্তকাঞ্জনবর্ণীতা স শ্যামেতি কথাতে ।”

‘সঙ্গীত মকরন্দ’ অনযায়ী রূপের তারতম্য অনুসারে হস্তিনী, শখি, চিত্রিণী ও পদ্মিনী—নত‘কী এই চার প্রকারের এবং বয়সের তারতম্য অননুসারে বাল্য, করণী ও বিদগ্ধ যৌবনা— এই তিন প্রকারের। সুলক্ষণযজ্ঞে দেহ, পদ্মের ন্যায় আরম্ভ কোমল করতল পদতল ও বদনমণ্ডল, রম্য কপোলন, জল, বিশাল কুচযুগে, কুসুম সজ্জিত কবর রচনা, সলাজ রে বাণী, মরালের মত সাবলীল গতি, নৃত্যগীত নিপণে, রসনাসমরি ভনভেঙ্গিমা, গাব শাস্ত্রে দক্ষতা, মনোহারিত্ব প্রভৃতি গুণসম্পন্ন হলে সেই নত’কী উর্বশী, মেনকা, রঙা প্রভৃতি আদর্শ’ নত’কীদের সমতুল্য।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

“মিরর গেচার’ গ্রন্থে বর্ণিত নটের গণে সুদর্শন, মিষ্টভাষী, বিধান, কার্য নিপলে, সুবৰ্ত্তা, উচ্চবংশজাত, কলাবিদ্যায় পারদর্শী, সুকণ্ঠ, সঙ্গীে অভিজ্ঞ, বাদ্যনিপণে, নত্যপারদর্শী, আত্মনির্ভরশীল, প্রত্যুৎপন্নমতি ও পরিহাসপ্রিয়।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment